“মিঠি নিমফল খাবি? ” রানা একগাল হাসল।
“ইস কি তেতো! খায় নাকি ওগুলো কেউ? তুই কি পাগল রে! ’’ মা-র জোর করে খাওয়ানো নিম-বেগুন ভাজার কথা মাথায় আসতেই মিঠির ওক উঠল।
“তুই কি বোকা। নিমফল তো মিষ্টি, নিমপাতা তেতো হয়। ’’ রানা সদর্পে বুক ফুলিয়ে জানান দিল।
“তাই?” চোখ গোলগোল করে তাকায় মিঠি।
“চল চল, ওই ঘোষেদের নিমগাছটায় উঠে আমি গাছ ঝাকান দেব, তুই নিচে দাঁড়িয়ে ফলগুলো কুড়াস। ’’
মিঠি নাচতে নাচতে চললো রানার পেছন পেছন।
“এইই আস্তে আস্তে আয় । শুকনো পাতায় পায়ের শব্দ শুনতে পাবে। ’’ রানা ফিসফিস করে সাবধান করে মিঠিকে।
মিঠি অনেক চেষ্টা করে, কিন্তু বাবার কিনে দেওয়া নতুন লাল বো দেওয়া জুতোগুলো এমনিতেই এত মচমচ আওয়াজ করে। মিঠির রাগ হয়, রানার ওপর না জুতোর ওপর বুঝতে পারেনা। রানার কি ভাল, জুতো পড়তে হয় না, ওর মা বকেও না পায়ে ধুলো লাগলে । মিঠি মুখ গোঁজ করে এগোয়।
“দাঁড়া দাঁড়া, এইখানে। ’’ বলেই রানা লাফিয়ে লাফিয়ে গাছে চড়তে থাকে। মিঠি হেসে ফেলে।
একটু ঝাঁকা দিতেই কত্ত কত্ত নিমফল টুপটাপ করে মিঠির গায়ে মাথায় পড়তে থাকে। খিলখিল করে হাসে ও ।
“অ্যাই , তোকে কুড়োতে বললাম না? ’’ রানা নেমে এসেছে ততক্ষণে , এসেই একটা কানমলা মিঠিকে ।
“ লাগছে ছাড় ছাড়, বাবাকে বলে দেব। ’’ মিঠি ঠোঁট ফুলিয়ে কাঁদতে লাগে।
“বলগে যা। কাকু আমাকে লজেন দেবে, কিচ্ছু বলবে না । ’’
মিঠি কথা না বলে নিমফল কুড়োয় । রানাও অনেক জড়ো করে ময়লা হাফপ্যান্টের পকেটে পোরে। “চল , আর কাঁদুনিবুড়ি হতে হবে না। ঝিলের পাড়ে চল। ’’ রানা হাত ধরে টান লাগায়।
দুজনে হাত ধরে দৌড়োয় । কাশীনাথের মাঠ , মিত্তিরদের বাঁশবাগান পেরিয়ে তারপর একটা পাটখেতের আল ধরে হেঁটে গিয়ে হল ঝিল।
ঝিলের পাড়ে বসে প্রথম নিমফল খায় মিঠি, খুব ঘেন্না করে। ওমা , পলকে মুখে হাসি। “কি মিষ্টি রে!’’
দেখতে দেখতে দুজনেরই কোঁচড় খালি; পা দুলিয়ে বসে কলমির ঝোপের ওপর লাল ফড়িঙের ওড়াউড়ি ।
“দাঁড়া তুই’’ বলে উঠে যায় রানা। মিনিটখানেক পরেই হাজির হয় কিসব একটা ফুল নিয়ে। সাদা , ছোট। রেললাইনের ধারে অনেক ঝোপ হয় এই ফুলের।
“এই দ্যাখ, এটা এভাবে নাকে পড়তে হয়। ঝুম্পিদিদিকে দেখেছি।’’ রানা ফুলটা মিঠির নাকে আলতো করে লাগিয়ে দেয়। মিঠি হাসে।
“তোকে না পুরো সিদেবী লাগছে। ’’ রানা চোখ মারে।
মিঠি ভয় পেয়ে যায়, টিচার বলেছে চোখ মারা খুব খারাপ জিনিস।
“এইটুকুন খেয়ে নাও তিতির, স্কুলে টপ করতে হবে তো। আর তারপর সুইমিং ক্লাস,… ’’
“না আর খাব নাআআআ! ’’ তিতির টেবিল থেকে উঠে দৌড় লাগায় , এখন চলবে ডাইনিং জুড়ে ছোটাছুটি , একজন মুখে খাবার নিয়ে, আরেকজন প্লেট হাতে। এক নিয়ম রোজ। ভালো লাগে না মিতালির।
“বাবান বাবান …” লাফাতে লাফাতে তিতির গিয়ে জড়িয়ে ধরে সঞ্জয়কে।
“ওলে বাবা লে, আমার পুচু সোনাটা খেয়েছে? ’’
“ সেই শান্তি কি আমার আছে? ’’ মিতালি গুমরোয় পাশ থেকে।
“খেয়ে নাও সোনা, নাহলে কি করে taller, stronger, sharper হবে? ’’ তিতিরকে কোলে তুলে বলে সঞ্জয়।
“ বাবান মা আজকে আবার আমায় papaya খাওয়াচ্ছে। ’’ তিতির কমপ্লেন জানায়।
“ ওকে, আমার সোনাকে খেতে হবে না papaya, আর আমার সোনা আজকে আমার কাছে খাবে। ’’
তিতিরের হাততালির মধ্যে সঞ্জয় মিতালির হাত থেকে প্লেটটা ছিনিয়ে নেয়।
“মেয়েটার সামনে atleast normal behave….’’ মিতালি দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে যায় দ্রুত।
আজ ১০:৩০ টায়ে ফার্স্ট ক্লাস, মেয়েকে স্কুলে ড্রপ করতে তো মিতালিকেই হবে। কোনদিন দায়িত্ব নিয়েছে সঞ্জয় একফোঁটাও ? মেয়ের ৪ মাস বয়স থেকেই তো উনি ওদেশে , ওকে স্কুলে ভর্তি, নিজের কলেজ, কম সামলেছে একার হাতে মিতালি ? এখন ইন্ডিয়াতে ফিরেও কি একদিনও সংসারে এতোটুকু contribute করেছে? আর এখন তো, থাক ওসব।
বডি ওয়াশের নরম গন্ধ আর ঈষৎ উষ্ণ শাওয়ারের জলে ডুবে যেতে থাকে সারারাতের ক্লান্তি। হাঁটুর কাছে আর ঘাড়ের কোণে এখনও কালশিটে । জ্বালা করছে সাবানজল লেগে। মিতালি দাঁত চেপে থাকে। তিতিরটা আরেকটু বড় হোক।
ফ্ল্যাটের পেছনে ফাঁকা জমি আগাছার ঝোপে ভরে আছে। কোথা থেকে একটা জংলা পারথেনিয়ামের গন্ধ সবকিছুকে আচ্ছন্ন করে দিয়ে ভেসে আসছে। মিতালি হারিয়ে যায় , অতলে।
“ বাবা মিঠিকে টিভিতে দেখলেন? ওই মাধ্যমিক রেজাল্টের পর? ’’ মা দাদুকে প্রনাম করতে করতে বলে।
“হ্যাঁ গো বউমা, দেখলুম মিঠিসোনাকে । ’’ দাদু মিঠির মাথায় শীর্ণ হাত বুলিয়ে দেন।
“দিদিভাই, নাড়ু খাবি? ’’ ঠাম্মা ডাক পাড়েন দরজার আড়াল থেকে।
“তিলের নাড়ু আছে ঠাম্মা? ’’ মিঠি হরিনপায়ে অদৃশ্য হয় পর্দার আড়ালে।
“ দেখেছ? আরে মেয়েটা , স্নানটা করে নে তো! কতক্ষণ ট্রেন জার্নি করে এলো… কোন বুদ্ধি আছে? ’’
“থাক বউমা, কতবছর পরে এলো বলো তো মেয়েটা। ’’
“হ্যাঁ দু বছর প্রায় ।’’ বাবা জুতোর ফিতে খুলতে খুলতে উত্তর দেয়।
দুহাতে চারখানা নাড়ু নিয়ে মিঠি চুপিচুপি খিড়কির দরজা দিয়ে বেরিয়ে পরে। এখন ভরা রোদ, কিন্তু দাদুদের এই আমবাগানটা সারাবছর ছায়া ছায়া। পাকা পাকা সিঁদুরে আম ঝুলছে সব গাছ থেকে। ধুর এত্তদিন এই পড়া পড়া করে আটকে রেখেছে মা বাবা, মনটাই ভালো হয়ে যায় এখানে আসলে।
মাটির রাস্তাটার শেষে বাদিকে রানাদের ঘর । টালির চাল, ছিটেবেড়ার দেওয়াল। উঠোনে এক কোণে বাতিল ঝুড়ি , প্লাস্টিকের কাপ,বালতি ডাই করে রাখা, আরেকদিকে ওদের পোষা হাঁসের ঘর। কত খেলেছে মিঠি ওদের উঠোনে। আর ওর মা কি দারুণ রসুনের আচার বানায়। মাঝে মাঝেই মা কে না বলে রানার সাথে বসে শাপলা, কচু , আচার , লঙ্কা দিয়ে ভাত মেখে খেয়েছে কত! আজকে সেসব মনে পড়ে খুব খুশি লাগছিল মিঠির কেন জানি।
দুবছর আগে একদিন বিকেলে রানার সাথে সেই ঝিলে গেছিল মিঠি। রানার বন্ধু বিলু, ওর বাবা মাছ ধরে। একটা ডোঙা ভেড়ানো ছিল পাড়ে, বিলুর বাবার। খুব সন্তর্পণে উঠেছিল দুজনে, একটু এদিক ওদিক করলেই সোজা জলে। রানা ওপাড়ে নিয়ে গিয়েছিল। ওপাড়ে পুরো অন্য আরেকটা জগৎ যেন। তখন পুজো সবে শেষ হয়েছে, ত্রয়োদশী ছিল বোধহয়। আকাশটা মিঠি আঁকার স্কুলে যেমন শিখেছে , পুরো সেরকম ছিল, ওপরে vermilion আর নিচে chrome yellow. মিঠি সোৎসাহে রানাকে রঙগুলো চেনাচ্ছিল। রানার যদিও সেরম একটা আগ্রহ নেই। ওপাড়ে নামতেই , দিগন্ত বিস্তৃত কাশফুলের বন… হাত কেটে গেছিল মিঠির কাশের ধারালো ঘাসে , রানা সঙ্গে সঙ্গে নিজের মুখে পুরে নিয়েছিল ওর আঙুলটা, মিঠির মনে আছে। আর তার মাঝে ছিল একটা বড় শিরিষ গাছ। তার তলায় রানা মিঠিকে একটা কাঁচের গ্লোব মতন জিনিস দিয়েছিল, তার ভেতরে জলের মধ্যে চিকচিকি, একজোড়া সাহেব মেম, বলডান্স করছে।
“ মিঠি এটা তোর জন্য। রথের মেলা থেকে কিনেছি। ’’ রানা বেশ গর্বের সাথে বলে, “ নিজের টাকায়।’’
“ওমা, কি সুন্দর রে!’’ মিঠির খুব সুন্দর একটা মিউজিক বক্স আছে, খুললে মিউজিক বাজে, আর বলডান্স করে দুজন, ছোটমামা দিয়েছে দিল্লি থেকে। কিন্তু এটা যেন আরও সুন্দর তার চেয়েও। সস্তার গোলাপি রিবনে মোড়া , কিন্তু কি সুন্দর একটা আভা বেরোচ্ছে যেন ওটা থেকে।
মিঠি ফস করে কি মনে হয়, রানার গালে একটা চুমু খেয়ে বসে।
রানা চমকে ওঠে। মিঠি খিলখিল করে হেসে ওঠে।
“রানা জানিস এরা দুজন কি করছে? ’’ মিঠি খোঁচায় ।
“কি আবার? নাচ! ’’ রানা মুখ নামিয়ে আঁকিবুঁকি কাটে মাটিতে।
“ উঁহু, এটাকে বলে বলডান্স। শিখবি? ’’
“ তুই জানিস? ’’ বিস্ময়ে হা করে তাকায় রানা।
“ হ্যাঁ তো, অ্যানুয়াল ফাংশানে আমি আর অঙ্কুশ পারফর্ম করেছিলাম একটা নাটকে । ’’
“অঙ্কুশ কে? ’’ রানা চোখ সরু করে জিজ্ঞেস করে।
“ কে আবার? আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আমার পাশে বসে সবসময় ক্লাসে। ’’ মিঠি মিষ্টি হেসে বলে।
হঠাৎ কেমন গম্ভীর হয়ে যায় রানা।
“চল বাড়ি চল। দেরি হলে সবাই খুঁজবে আমাদের।’’ রানা ডোঙাতে উঠে দাঁড়ায়।
মিঠি ঘাবড়ে গিয়ে ওর পিছু পিছু যায়।
পাড়ে ফিরতে না ফিরতেই দূর থেকে বাবা মা আর রানার বাবা দিনুকাকুকে চোখে পড়ে । সবার মুখে আষাঢ়ে মেঘ।
দিনুকাকু রানাকে সেদিন মারতে মারতে বাড়ি নিয়ে গিয়েছিল। বাবা মায়ের “কতবার বারণ করব এখন বড় হয়েছ, যার তার সাথে যেখানে খুশি যাবে না… কলি, ঋত্বিক, সুহানা ওদের সাথে মেশো , আর কত বন্ধু চাই?…’’ শুনে কান্না পায়নি ওর, মিঠির কান্না পেয়েছিল রানা একবারও মুখ ঘুরে তাকালো না বলে।
“কাকিমা? ভালো আছ ? ’’ মাধ্যমিকে কলকাতায় টপার মিতালি উঁকি মারে ঘরের ভিতর।
“কে? ওমা, আমাদের মিঠিরানি? কবে এলি মা? ’’ রানার মা ছুটে আসে দেখতে পেয়ে। ছেঁড়া শাড়িতে তিন জায়গায় তাপ্পি।
“আজকেই।’’
“ আয় মা বোস। তুই কত ভালো রেজাল করলি রে, টিভিতে দেখালো। সবাই দেখলাম গ্রামের লোক মিলে, নে মা মোয়া খা। ’’ কাকিমা মোয়া ধরিয়ে দিল মিঠির হাতে একটা।
“রানা কই? ’’
“রানা তো একন ওর বাবার সাথে টাউনে যায়, ওই হাতে হাতে জোগাড়ের কাজ করে দেয়। ’’ রানার বাবা দিনমজুর। “ এই তো ফিরবে আরেকটু পরেই, বোস। ’’
“না কাকিমা আজ আসি, পরে আবার আসব। ’’ মিঠি উঠে পড়ে।
সেবার আর যাওয়া হয়নি রানার বাড়ি। কিন্তু দেখা হয়েছিল রানার সাথে। একদিন খুব সকালে, কাকডাকা ভোরে। রানার “ কেমন আছিস? খুব ভালো রেজাল্ট করলি তো”-র ফাঁকে দুফোঁটা চোখের জল মিশে ছিল, মুছিয়ে দিতে সাহস হয়নি মিঠির।
তারপর দাদু চলে যাওয়ার পর গিয়েছিল দেশে। বিষণ্ণ এককোণে দাঁড়িয়ে থাকার সময়ে শ্মশানযাত্রীদের মধ্যে থেকে একজন হেসেছিল ওর দিকে তাকিয়ে। তাল কেটে গিয়েছিল সঞ্জয় ফোন করাতে। মিঠির বয়ফ্রেন্ড।
আর তারপর শেষ যাওয়া সঞ্জয়ের সাথে বিয়ের একমাস আগে। আইবুড়োভাত খাইয়েছিল কাকু-কাকিমা। কোন দিনমজুরের ছেলের খোঁজ পড়েনি আর।
কাল রাতে আবার মিতালির গায়ে হাত তুলেছে সঞ্জয়। এই নিয়ে ৪-৫ মাস হল চলছে। রেগুলার। ওর ফোনে আপত্তিকর মেসেজগুলো দেখেছিল ঠিক ৩ মাস আগে, সন্দেহ যদিও আগের থেকেই ছিল। confront করলেই সেটা হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যেত। অতবড় রাক্ষুসে লোকটার সাথে পেরে উঠবে কি করে মিঠি?
বেশি অ্যাগ্রেসিভ হয়ে গেলে জোর করে মিলিত হওয়ার চেষ্টা। সঞ্জয়টাকে আর মানুষ বলে মনে হয় না মিতালির। এত ছোট একটা মেয়ে থাকতেও যার আরেকজনের সাথে সম্পর্ক , তাকে আর…
কিন্তু সেদিন লিমিট ক্রস করে গেল সঞ্জয় , মেয়ের সামনেই মিতালির গায়ে হাত তুলল । মেয়েটা পুরো দিনটা ভয়ে কান্নাকাটি , ঘর থেকেই বেরোতে চাইছিল না। মিতালি অনেক সহ্য করেছিল, মেয়ে বড় হোক আরেকটু, কিন্তু এরপর আর মনে হয় দেরি করাটা সমীচীন নয়।
সেদিন দুপুরে মেয়েকে কোলে নিয়ে জানলার ধারে ঠায় বসে ছিল মিতালি।
“মামমাম , তুমি কি দুষ্টুমি করেছ? তাহলে বাবান তোমাকে মারল কেন? ’’
“হ্যাঁ তিতির, আমি খুব একটা বড় দুষ্টুমি করেছি, তাই বাবান খুব বকে দিয়েছে আমাকে।’’
“এমা, মামমাম দুষ্টু , মামমাম আমার থেকেও দুষ্টু।’’
মিতালি চুপ হয়ে থাকে । তিতির বকবক করতে করতে ওটা কি পাখি, ওটা কি ট্রি তে ব্যস্ত হয়ে পড়ে অচিরেই। সত্যিই তো , মামমাম কি কোনদিন তাকে কোলে করে বসে আর জানলা দিয়ে পাখি গুনেছে?
“ ওটা নিমগাছ তিতির , ওই যে খুব তেতো হয়, তোমাকে একবার খেতে হয়েছিল যখন তোমার পেটব্যাথা হয়েছিল, মনে আছে? ’’
“ ইয়াক, ওটা খুব বাজে। মামমাম দ্যাখো ক্রো টা ওই ফ্রুটটা খেতে যাচ্ছে, কি বোকা কাক টা। এই কাক যা যা, শুঃ ! ’’
মিতালি চমকে ওঠে। নিমফল! না রে পাগলি , তেতো নয় রে, তেতো নয়।
চশমার ঝাপসা কাঁচের আড়ালে দুজোড়া উজ্জ্বল চোখ নিয়ে উঠে দাঁড়ায় মিতালি। মেয়েকে কোলে নিয়ে। IRCTC-র সাইট । অনলাইন টিকেট বুকিংটা সেরে ফেলতে হবে, সেই স্বপ্নের দেশটার।
যেখানে নিমফল আর পারথেনিয়াম আর কলমির গন্ধে সুখের স্বপ্ন দেখা যায়। যেখানে দিনমজুরের ছেলে রাজা আর মিঠিরানি ঘর বাঁধে শাল-শিরিষের ছায়ায়।